এক সময় এই জগতে কিছুই ছিল না ।
না ছিল মাছ !
না ছিল আকাশে তারা !
না ছিল সাগর ও সুন্দর ফুল !
সব কিছু শূন্য ও অন্ধকার ছিল ।
কিন্তু ঈশ্বর ছিলেন ।
ঈশ্বরের ছিল এক চমৎকার পরিকল্পনা । তিনি একটি মনোরম জগতের চিন্তা করেছিলেন, আর চিন্তার সাথে সাথেই তিনি করেছিলেন তার সৃষ্টি । যখন কিছুই ছিল না, তখন তিনি সবকিছুই সৃষ্টি করলেন । ঈশ্বর কোন কিছু সৃষ্টির আগে শুধু বললেন, ‘ এটা হোক’ এবং তা - ই হল ।
তিনি আলোর সৃষ্টি করলেন । নদী ও সাগর সৃষ্টি করলেন । পৃথিবী ঘাসে আচ্ছাদিত হল, পশু পাখি ও গাছপালারও সৃষ্টি হল । সবশেষে তিনি একজন মানুষ ও তাঁর জন্য একজন স্ত্রীর সৃষ্টি করলেন । তাদের নাম আদম ও হবা ।
ঈশ্বর তাদের ভীষণ ভালবাসতেন । যে বাগানে তারা থাকত, তিনি প্রতি সন্ধ্যায় সেখানে তাদের দেখতে যেতেন ।
সমস্ত বাগানটাই তাদের উপভোগের জন্য ছিল । কেবল একটি গাছ ঈশ্বর তাদের জন্য নিষিদ্ধ করেছিলেন ।
আদম ও হবা সুখী ছিল, যে পর্যন্ত না ঈশ্বরের শত্রু শয়তান তাদের পরীক্ষায় ফেলল । তারা ঠিক করল ঈশ্বরের নিষিদ্ধ গাছের ফল খাবে । তারা পাপ করল । এই প্রথম তারা লজ্জিত ও দুঃখিত হল ।
তারা আর ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলতে পারল না । এখন থেকে তাদের ব্যথা ও কষ্ট পেতে হবে এবং মরতে হবে । কতই না দুঃখিত হয়েছিল তারা !
তখন ঈশ্বর তাদের সাহায্য করতে প্রতিজ্ঞা করলেন । যখন সঠিক সময় আসবে, তখন তিনি তাঁর পুত্র যীশুকে এই জগতে পাঠাবেন। যীশু স্বর্গ থেকে নিচে নেমে আসবেন এবং পাপ ক্ষমার পথ তৈরি করবেন । এই কারণে যীশুকে মানব জাতির জন্য কষ্ট ও মৃত্যুভোগ করতে হবে । একথা শুনে মানুষ কতই না আনন্দিত হয়েছিল যে, ঈশ্বর এক ত্রাণকর্তা পাঠাবেন ।
আদম ও হবার ছেলেমেয়ে ও নাতি-নাতনী হয়েছিল । এইভাবে বহু লোক জগতে বাস করতে লাগল ।
সকলেই যেন সুখী হয় এটাই ঈশ্বর চেয়েছিলেন । তিনি মানুষকে কি করতে হবে, তা বলেছিলেন । নিচের আইন - কানুন ঈশ্বর তাদের দিয়েছিলেনঃ
১। আমার জায়গায় কোন দেবতাকে দাঁড় করাবে না ।
২। পূজার উদ্দেশ্যে তোমরা কোন মূর্তি তৈরী করবে না ।
৩। কোন বাজে উদ্দেশ্যে তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নাম নেবে না ।
৪। বিশ্রামবার আমার উদ্দেশ্যে আলাদা করে রাখবে । ৫। তোমাদের মা-বাবাকে সম্মান করে চলবে ।
৬। খুন করো না ।
৭। ব্যভিচার করো না ।
৮। চুরি করো না ।
৯। কারো বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ো না ।
১০। অন্যের ঘর - দুয়ার, স্ত্রী, দাস - দাসী , গরু - গাধা কিংবা আর কিছুর ওপর লোভ করো না ।
এইসব কথা বাইবেলে লেখা আছে । তাই আমরা এগুলো পড়তে পারি । যদি আমরা আইন - কানুনগুলি পালন করি আমরাও সুখী হব ।
শয়তান চায় না যে, আমরা আইন - কানুন পালন করি । যখন কেউ আমাদের দিকে লক্ষ্য করে না, তখন শয়তান আমাদের চুরি করতে বলে । কিন্তু ঈশ্বর সব জানেন । তিনি সব কিছু দেখতে পান ।
কেউ ধরতে পারবে না এই বলে শয়তান আমাদের মিথ্যা কথা বলতে উৎসাহ দেয় । ঈশ্বর সব কিছু জানেন । তিনি সব কিছু শুনতেও পান ।
যখন আমরা এরকম কাজ করি তখন মনের ভেতর খারাপ লাগে । ঈশ্বর আমাদের ভালবাসেন এবং তিনি আমাদের ভাল হতে সাহায্য করেন । সেই জন্য তিনি যীশুকে জগতে পাঠালেন । তিনি তাঁর প্রতিজ্ঞা স্মরণ করলেন ।
অনেক বছর পর একটি ছোট শিশু হয়ে যিশু জন্ম নিলেন । তারপর বড় হয়ে তিনি পরিপূর্ণ মানুষ হলেন ।
যীশু অনেক আশ্চর্য কাজ করলেন । তিনি রোগী সুস্থ করলেন । তিনি অন্ধের চোখ খুলে দিলেন এবং ছেলে মেয়েদের আশীর্বাদ করলেন ।
যীশু কখনও কোন ভুল করেননি । তিনি লোকদের ঈশ্বরের বিষয়ে বলতেন এবং কেমন করে ঈশ্বরকে মানতে হবে তাও বলতেন ।
কিছুদিন পর যিশুর শত্রুরা তাঁকে ক্রুশে পেরেক দিয়ে বিদ্ধ করল । তাঁর মৃত্যু হল ।
সকলের পাপের জন্য তিনি দুঃখভোগ ও মৃত্যুবরণ করলেন, এমনকি যারা তাঁকে ক্রুশে বিদ্ধ করেছিল তাদের জন্যেও ।
যীশুকে কবর দেওয়া হল । কিন্তু এক আশ্চর্য ঘটনা ঘটল । তিনি আর কবরে রইলেন না ; মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে উঠলেন ।
শীঘ্রই ঈশ্বর তাঁকে একটি মেঘের মধ্য দিয়ে স্বর্গে তুলে নিলেন । যখন তাঁর বন্ধুরা তাঁকে যেতে দেখেছিলেন , তখন একটি দূত তাদের বললেন, ‘ যীশু আবার ফিরে আসবেন’ ।
যীশু আমাদের পাপের জন্য মরেছিলেন । তিনি চান যেন আমরা দুঃখিত হই এবং পাপ স্বীকার করি । তিনি আমাদের ক্ষমা করতে প্রস্তুত ।
যে কোনো সময় আমরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে পারি । তিনি প্রত্যেকটি কথা শুনেন ও প্রতিটি চিন্তা জানেন । যখন আমাদের পাপ ক্ষমা হয়ে যায় তখন যীশু আমাদের হৃদয়ে আনন্দ দেন । তখন আমরা যেটা ঠিক সেটাই করতে চাই । তখন আমরা দয়ালু হতে চাই ।
যদি আমরা ঈশ্বরকে অমান্য করি এবং শয়তানকেই অনুসরণ করি, তাহলে যখন মৃত্যু হবে, তখন ঈশ্বর আমাদের নরকে ফেলবেন । নরক হচ্ছে এমন এক জায়গা, যেখানে আগুন সবসময়ই জ্বলতে থাকে ।
কিন্তু যদি আমরা যীশুকে ভালোবাসি এবং তাঁর কথা মানি, তাহলে তিনি যখন আবার ফিরে আসবেন তখন আমাদের স্বর্গে নিয়ে যাবেন । স্বর্গ হচ্ছে ঈশ্বরের এবং তাঁর পুত্র যীশুর সুন্দর বসবাসের জায়গা । ভালবাসা ও আলোয় ভরা একটি জায়গা । সেখানে আমরা সব সময় আনন্দে থাকব ।
যীশু আমাকে ভালবাসেন
১। যীশু করেন প্রেম আমায় ,
বাইবেলে তা জানা যায়;
তাহার শিশু কমল প্রাণ
কিন্তু তিনি শক্তিমান ।
২। ভালোবাসেন প্রাণ দিলেন,
স্বর্গের দ্বারও খুলিলেন,
তিনি ধুইবেন পাপ আমার
দিবেন স্বর্গে অধিকার ।
ধূয়া - হাঁ, ভালোবাসেন, হাঁ , ভালবাসেন ;
হাঁ, ভালবাসেন , বাইবেলে জানা যায় ।
৩। অশেষ ভালোবাসা তাঁর ,
থাকেন নিকটে আমার;
ছাড়ব না গেলেও প্রাণ
আমায় লইবেন স্বর্গধাম ।