সত্ব বন্ধন স্বাধীনতা
বিষন্নতা আনন্দ
ভয় শান্তি
ঘৃণা ভালবাসা
অপবিত্রতা পবিত্রতা
আজকের পৃথিবীতে অনেক লোক রয়েছে যাদের হৃদয়ে রয়েছে অস্থিরতা । কেন তাদের হৃদয়ে এত অস্থিরতা, অবশ্য তার অনেক কারণও রয়েছে । তবে যে কারণেই হোক না কেন, আমরা এটা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি যে এ সবই ঈশ্বর জানেন এবং যারা বিশ্বাসে তাঁর কাছে আসবে, তিনি তাদের প্রত্যেকটি অস্থির হৃদয়ে শান্তি দিতে অপেক্ষা করে আছেন । ঈশ্বর আপনাকে ভালবাসেন এবং তিনি আপনার হৃদয়ে বাস করতে চান ।
এখানে যে মানুষের হৃদয়টি দেখানো হয়েছে, তা হচ্ছে মানুষের ভেতরে বসবাস রত আকাঙ্ক্ষা বা প্রকৃতি, অথবা বাস্তবিকই আপনার মধ্যে “সত্যিই যা আছে”, তা - ই । আপনি যা কিছু করেন তা - তো আপনার হৃদয়ের থেকেই বের হয়ে আসে ।
সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর সর্বপ্রথম যখন মানুষ সৃষ্টি করেন, তখন তিনি চেয়েছিলেন যেন মানুষ সুন্দর এদন বাগানে সুখে বসবাস করে এবং তাঁর সেবা করে ।
তবু ঈশ্বরের পরিকল্পনা ধ্বংস করার জন্য কিছু ঘটে গেল । দিয়াবল, যাকে আমরা বলি শয়তান - সে তো ঈশ্বরকে ঘৃণা করে । সে মানুষের মধ্যে সন্দেহ ঢুকিয়ে দিল, আর মানুষ ঈশ্বরের অবাধ্য হল । এ কারণে মানুষের হৃদয় পাপে ও মন্দতায় ভরে গেল । আর তো তার সাথে ঈশ্বরের সহভাগিতা থাকল না, যা ছিল সব রকম আনন্দের ঊর্ধ্বে । তার হৃদয় হল প্রতারণা পূর্ণ এবং বেপরোয়া মন্দতায় ভরা ( যিরমিয় ১৭ : ৯ পদ ) । এভাবেই মানুষ ঈশ্বরের কাছ থেকে আলাদা হয়েছিল ।
কিন্তু ঈশ্বরের মহান ভালবাসার কারণেই তিনি তাঁর পুত্র, প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে মানুষের পাপের জন্য জীবন দিতে পাঠিয়েছিলেন । এতে প্রত্যেক মানুষের জন্য নতুন আশা দেওয়া হল । ঈশ্বর প্রত্যেক মানুষের হৃদয়ে বাস করতে চান এবং একদিন স্বর্গের চমৎকার সাজানো বাসস্থানে উদ্ধারপ্রাপ্তদের তাঁর সাথে বাস করার জন্য নিয়ে যেতে চান । পাপ কোনদিনও স্বর্গে ঢুকতে পারে না - এটাই হল ঈশ্বরের নির্দেশ ।
ঈশ্বরের ইচ্ছার বিপক্ষে যা কিছু চিন্তা-ভাবনা, আচার - আচরণ, কাজ অথবা বিশ্বাস, এসবই হচ্ছে পাপ । এই সবকিছুই মানুষের হৃদয়কে নোংরা করে । ঈশ্বর শুধুমাত্র মানুষের বাইরের দিকটাই দেখেন না, কিন্তু মানুষের অন্তরের ভিতর, অর্থাৎ হৃদয়টাও দেখেন । ঈশ্বরের কাছে কোন কিছুই লুকানো যায় না । তিনি সব জায়গায় সব মানুষকে অনুতাপ করতে আদেশ দিয়েছেন ( প্রেরিত ১৭ : ৩০ পদ ) । যদি তাঁর নির্দেশ অবজ্ঞা করা হয়, তাহলে মানুষকে সব সময় জ্বলতে থাকা আগুনের হ্রদে ফেলে দেওয়া হবে, যাকে নরক বলা হয় ( মথি ২৫ : ৪১ পদ ) ।
অবশ্যই আমাদের পাপসমূহের জন্য অনুতাপ করতে হবে, স্বীকার করতে হবে এবং ক্ষমা পেতে হবে । তাহলে ঈশ্বর আমাদের মধ্যে এক নতুন হৃদয় সৃষ্টি করবেন ; যে হৃদয় তাঁর সেবা করবে ও তাঁকে ভালবাসবে । তাঁর আত্মা আর কখনও বাইরে থেকে মানুষকে দোষী করবেন না , কিন্তু তার হৃদয়ে ঢুকে তাকে সান্ত্বনা দেবেন ও পরিচালনা করবেন । সবশেষে, আমাদের এই পৃথিবীর জীবন যখন শেষ হয়ে যাবে, তখন ঈশ্বর তাঁর কাছে আমাদের নিয়ে যাবেন ।
পাপীর হৃদয়
এখানে একটি হৃদয় দেখানো হয়েছে, জগতের অধিপতি যাকে শাসন করছে । জগতের অধিপতি অনেক মন্দ আত্মাদের নিয়ে একজন পাপীর জীবনে কর্তৃত্ব করে এবং এর মধ্যে দুটি হচ্ছে অহংকার ও স্বার্থপরতার আত্মা । আমাদের এই দৃষ্টান্তমূলক ছবি হিসাবে আপনি দেখছেন যে শয়তান এই হৃদয়ের মাঝখানে রয়েছে । আর ময়ূর, সিংহ, শূকর, সাপ এবং অন্যান্য প্রাণীগুলো গর্ব, হিংস্রতা, অশুচিতা এবং সূক্ষ্ম চাতুরীতে পূর্ণ আত্মগুলোর প্রতিনিধিত্ব করছে , যা কিনা পাপীর হৃদয়ে বাস করে । যদি দেখতে ভালও হয় তবু এরকম হৃদয় যা উৎপন্ন করে তা ঈশ্বরের গ্রহণযোগ্য নয়, কারণ এই হৃদয় গর্ব ও আত্ম - সম্মান বোধ দ্বারা অনুপ্রাণীত ।
হয়তো এইরকম হৃদয়ে মাতলামির মতন পাপ রয়েছে ; ফলে তার আচার - আচরণ লজ্জা ও অসম্মান নিয়ে এসেছে । এটা হয়তো বা কাম লিপ্সাতে পূর্ণ এবং খারাপ কথাবার্তা বলে ( হিতোপদেশ ২৩ : ২৯ - ৩৩ পদ ) । এইরকম হৃদয়ে প্রায়শই সিগারেট , পান ও গুল খাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়, যা দেহকে নোংরা ও লজ্জাজনক করে অথচ
পাপীর হৃদয়
যে দেহকে ঈশ্বর তাঁর থাকবার ঘর করতে চান ( ১ করিন্থীয় ৩ : ১৬ , ১৭ পদ ) ।
জাগতিক অথবা মাংসিক কামনা, অনৈতিকতা , ঘৃণিত কাজ এবং ব্যভিচার এখানে বাস করে, এমন কি কাজে লিপ্ত না হয়েও তা চিন্তার মধ্যে বাস করে । যীশু বলেছেন, কামভাবে কোন মেয়ের দিকে তাকালে তার সাথে হৃদয়ে ব্যভিচার করা হয় ( মথি ৫ : ২৮ পদ ) । এগুলোই অনেক লোকের জীবনে পাপ পূর্ণ ও লজ্জাহীন ভোগের আনন্দ নিয়ে আসে । নাচ - গান, সিনেমা, নাটক এবং নোংরা সাহিত্য পাপীর হৃদয়ের কাম লালসার খাবার হয়ে থাকে । “কিন্তু যে ব্যভিচার করে সে নিজের দেহের বিরুদ্ধেই পাপ করে” ( ১ করিন্থীয় ৬ : ১৮ পদ ) ।
অতিরিক্ত খাওয়া প্রায় মাতলামির মতই এবং পুরাতন নিয়মের আইন - কানুন অনুসারে এটাও সাংঘাতিক পাপ ( দ্বিতীয় বিবরণ ২১ : ১৮ - ২১ পদ ) । ফেনসিডাইল, কোকেন, আফিম, গাঁজা, ভাং ইত্যাদি এবং অনেক আচরণ পরিবর্তনকারী ওষুধ এই হৃদয় দখল করে নিতে পারে । এইগুলোর কোনটা আবার শুধু মনকে ধ্বংস করে তা নয়, কিন্তু দেহ , প্রাণ ও আত্মা ধ্বংস করে দেয় ।
জুয়া খেলা, ঠকবাজি, চুরি করা, মিথ্যা কথা বলা এবং প্রতারণা করার মত মাংসিক যে ফল তা আমাদের হৃদয় ভেঙে দেয় । এই পাপগুলোর মধ্যে এমন অনেক পাপ রয়েছে , যা ন্যায্যতা প্রতিপন্ন করার জন্য অজুহাত হিসাবে বলা হয়, যেমন - “সকলেই এটা করছে “। এ ধরনের কাজগুলোর গুরুত্ব হালকা করতে বলা হয়, “এর সবটুকু তো ভুল না,”। অথবা, “ এতে তো কারো ক্ষতি হয় না,” অথবা, “ সকলেই তো এটা করছে ।”
লোভ হচ্ছে এমন, যা অন্যের কোন বস্তুর প্রতি আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করে সাপের মতো ফুঁসে ওঠে । এটা অন্যের সম্পদ দেখে তা গ্রহণ করতে কামনায় উদগ্রীব হয় । যে কোন রকম বৈধ বা অবৈধভাবে তা পাবার জন্য উদ্যোগী হয় । জাগতিক সম্পদ পাবার জন্যই এই অসৎ উদ্দেশ্য । এইরকম পাপ যে অবস্থায় সৃষ্টি করে, তা ঠিক লূক ১৬ : ১৯ - ৩১ পদে উল্লেখিত ধনী লোকটির মত । এই লোকটি নরকে গিয়ে তার চোখ খুলেছিল এবং তার আগুনে তাতান জিভে এক ফোঁটা জল দিতে অনুরোধ করেছিল ।
অলসতা ( কচ্ছপের সাথে তুলনা করা যায় ), উদাসীনতা, ইচ্ছাপূর্বক বিলম্ব করা এবং কুঁড়েমি হচ্ছে এই ধরনের হৃদয়ের প্রলোভন ও পাপসমূহ । কাজ করতে খুব অলসতা দেখানো এবং নিজের হাতে সৎ ভাবে পরিশ্রম করতে কুঁড়েমি করা একদিকে অন্যদের সম্পদের প্রতি লোভনীয় দৃষ্টি দেওয়ার সামিল ( হিতোপদেশ ২১ : ২৫ - ২৬ পদ ) ।
হস্তরেখা, ডাকিনীবিদ্যা, কোষ্ঠী পড়া, জ্যোতিষ বিদ্যা এবং প্রেত তত্ত্ব হচ্ছে ধূর্ত মাকড়সার মত; যা পবিত্র আত্মা বিহীন হৃদয়কে পরিচালনা করে । শয়তানের প্রভাবে চালিত এ সবই ঈশ্বর ঘৃণা করেন; এগুলো পাপী হৃদয়ের জন্য কিছু মাত্র লাভ হয় না, কারণ প্রতারণা ও দুর্নীতি আগে থেকেই সেখানে রয়ে গেছে ( যিশাইয় ৪৭ : ১২ - ১৫ পদ ) ।
অনেক সময় জঘন্য মেজাজের কারণে রাগ এবং অসংযত আচরণ বারবার ঘটে, বিচারের নামে প্রতিশোধ নেওয়া হয় । গীতসংহিতা ৩৭ : ৮ পদ আমাদের আদেশ করেছে যেন আমরা এ ধরনের পাপসমূহ থেকে দূরে থাকি । তবুও পাপে পূর্ণ হৃদয় নিঃস্বার্থ ভাবে ভালবাসতে ব্যর্থ হয় । কোন কোন সময়ে এ রকম নিষ্ঠুরতার আত্মাগুলোকে সংযত রাখা যায় , যদিও তা শীঘ্রই তাদের উগ্রতা ও ধ্বংসাত্মক ভাব নিয়ে ফেটে পড়তে পারে । এর ফলে দুঃখ, হতাশা, কষ্ট , এমন কি মৃত্যু পর্যন্ত আসতে পারে । হিংসা, পরশ্রীকাতরতা, মন্দ ইচ্ছা এই রকম হৃদয়কে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে , যার ফলে অন্যদের জীবনে বয়ে আনে দুর্দশা, দুঃখ এবং নিরানন্দ ভাব ।
অসার ও কাল্পনিক উপায়ে গর্ব এই হৃদয়ের মধ্যে তার কুৎসিত মাথা উঁচু করে থাকে । সে তার সঙ্গী - সাথীদের অনুভূতি ও মঙ্গলের দিকে খুব কমই দৃষ্টি রাখে, কারণ শুধু নিজের মঙ্গলের দিকেই তার লক্ষ্য থাকে । যে জাগতিক সৌন্দর্যের, ব্যক্তি সম্মান, শিক্ষা, ফ্যাশন, জাগতিক সম্পদ, যশ, সম্মান , উদ্ধত স্বভাব, উঁচু মন - মানসিকতা , আত্ম - ধার্মিকতা এবং তার অধিকার নিয়ে নিজেকে সাজায় । খুব সহজেই সে তো দুঃখ দিতে পারে, আঘাত করতে পারে এবং অসন্তোষ প্রকাশও করতে পারে । যখন অন্যরা তার সম্পর্কে ভাল বলে না, সে তখন আঘাত করতে বা সমস্যা করতে চেষ্টা করে । অহংকার অনেক সময় পারিবারিক বন্ধন ও পূর্বপুরুষদের কাজ দ্বারা নিজেকে মহিমান্বিত করে । প্রশংসা পাবার জন্য , ক্ষমতা পাবার জন্যও প্রলুব্ধ হয় । সে সব সময় তার ভাল কাজগুলোর প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয় এবং অন্যান্য সঙ্গী - সাথীর প্রচেষ্টাকে উপেক্ষা করে । শাস্ত্রে উল্লেখিত সরল ও সহজ শিক্ষা অহংকার প্রযুক্ত অবজ্ঞাত হয়; যতক্ষণ পর্যন্ত তিরস্কার বা সংশোধন করা না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত যুক্তি দেখাতে ও সঠিক প্রমাণের চেষ্টা সে চালিয়ে যায় ।
গর্ব বা অহংকারকে স্বর্গ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল এবং সে আর কখনও স্বর্গের দরজা দিয়ে ঢুকতে পারবে না । ঈশ্বর গর্বভরে তাকানো ঘৃণা করেন ( হিতোপদেশ ৬ : ১৬, ১৭ পদ ) । শয়তান থেকে এর শুরু এবং এর চূড়ান্ত গন্তব্য হচ্ছে নরক । “অহংকার ধ্বংস আনে আর গর্বে ভরা মন পতন আনে” ( হিতোপদেশ ১৬ : ১৮ পদ ) । ঈশ্বর যে কোন রকম অহংকার ঘৃণা করেন ও প্রতিরোধ করেন, কিন্তু নম্রদের অনুগ্রহ দেন ( ১ পিতর ৫ : ৫ পদ ) ।
যদিও পাপী বিবেককে সমস্যায় ফেলে, দলিত - মথিত করে, বিবেকের বিরুদ্ধে পাপ করতে থাকে, তার পরেও বিবেক অনুযোগ করতে ক্ষান্ত হয় না ( ১ তীমথিয় ৪ : ২ পদ ) । তবু তা সব সময় আছে, এবং নির্জন মুহূর্তে তা তাকে দোষী করে ও বিচার করে মনের মধ্যে ভয়ের সৃষ্টি করে এবং অপরাধবোধ জন্মায় । মানুষের কাছে এটাই হল ঈশ্বরীয় ঘোষণা যে প্রত্যেকের জন্য বিচার অপেক্ষা করছে, কারণ “যে পাপ করবে সে-ই মরবে” ( যিহিষ্কেল ১৮ : ৪ ) ।
পাপী হৃদয় প্রতারণা পূর্ণ অজ্ঞতা, আলস্য এবং জড়তার মধ্য দিয়েই ঈশ্বরের ভালবাসাকে খোলামেলা প্রতিরোধ করে । এটি তার মত অগণিত হৃদয়কে অনন্ত নরকের দিকে যেতে দেখে নিজেকে মিথ্যা সান্ত্বনা দেয় । এটা তার বিশ্বাস যে আরও অনেক সময় আসবে যখন উপভোগ করা পাপ ও তার দাসত্ববন্ধন ভবিষ্যতে মোকাবেলা সহজে করা যাবে । অবিশ্বাস বশত এটি পবিত্র শাস্ত্র থেকে মুখ ফিরায় যা তার জীবনে দণ্ড বয়ে আনে এবং অন্যান্য পাপীদের বৃথা পরামর্শ গ্রহণ করে । শয়তান নির্দয়ভাবে সত্যের প্রতি তার চোখ অন্ধ করে রাখে । হৃদয় যখন ঈশ্বরের বাক্যের দিকে এগিয়ে আসে, শয়তান তখন সেই হৃদয়কে ভুল পথে চালাতে উদ্যোগী হয় । সে প্রলোভিত করে, ঠিক যে ভাবে আদি মাতা হবাকে ঈশ্বরের প্রতি সন্দেহ সৃষ্টি করতে সে প্রশ্ন করেছিল, “ ঈশ্বর কি সত্যিই বলেছেন ?” তার পরেও ঈশ্বর এই হৃদয়ে কথা বলতে থাকেন । “ঈশ্বর মানুষকে এত ভালবাসলেন যে তাঁর একমাত্র পুত্রকে তিনি দান করলেন, যেন যে কেউ সেই পুত্রের উপরে বিশ্বাস করে সে বিনষ্ট না হয় কিন্তু অনন্ত জীবন পায়” ( যোহন ৩ : ১৬ পদ ) । হ্যাঁ, সমস্যাগ্রস্ত হৃদয়, ঈশ্বর আপনাকে ডাকছেন । “ যে আমার কাছে আসে আমি তাকে কোনমতেই বাইরে ফেলে দেব না “ ( যোহন ৬ : ৩৭ পদ ) ।
দোষী ও অনুতাপী
একজন পাপীর এইরকম হৃদয় ঈশ্বরের ভালবাসা ও ন্যায়
দোষী ও অনুতাপী
বিচারের প্রতি সাড়া দিতে শুরু করে । পবিত্র আত্মা তাকে তার পাপ সম্পর্কে দোষী ও বিচার সম্পর্কে চেতনা দিতে থাকে । পবিত্র আত্মা তাকে পাপ থেকে উদ্ধার পাবার জন্য যীশুর দিকে তাকাতে আমন্ত্রণ জানায় । তার প্রার্থনা অনুগ্রহ সিংহাসন পর্যন্ত পৌঁছে যায়; যা কি না তার প্রাণের গভীর থেকে হতাশা পূর্ণ কান্নার মধ্য দিয়ে বের হয়ে আসে , এবং যা কিনা অনেক সময় শুধুমাত্র জিভ দিয়ে প্রার্থনা করা কিন্তু নয় । যদিও বাইরে থেকে স্পষ্ট স্বাধীনতা রয়েছে, কিন্তু ভিতরের অংশে রয়েছে নিষ্ঠুর ও নিদারুণ যন্ত্রণার প্রভুর প্রতি দাসত্ববন্ধন । স্বর্গ ও পৃথিবীর ঈশ্বর এই অবস্থা লক্ষ্য রাখেন; তিনি এই কষ্টকর আর্ত চিৎকার শুনে উত্তরও দেন ( যাত্রা পুস্তক ৩ : ৭ পদ ) । সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরের অনুগ্রহে এই হৃদয়টি আলো পায় এবং আলোর প্রতিফলনে তার পাপ বুঝতে পারে, যা পবিত্র শাস্ত্রের মধ্য দিয়ে সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে এবং সেই সাথে ঈশ্বরের বাক্য বুঝতে পারে ও বিশ্বাসে গ্রহণও করতে পারে । নিদারুণ যন্ত্রণা ও উদ্বেগ থেকে এই হৃদয় বিজয় লাভ করে ।
পাপে পূর্ণ হৃদয় ঈশ্বরের সামনে নিজেকে অধম বলেই প্রকাশ করে থাকে । সে তো এও বুঝতে পারে, তার এমন কিছুই নাই যা ঈশ্বরের অপেক্ষমান ক্রোধ প্রশমন করতে পারে । সে এও বুঝতে পারে যে বোকার মত জীবন - যাপনের ফলে তার হৃদয়ের ক্ষত দুর্গন্ধযুক্ত ও কলুষিত। ( গীতসংহিতা ৩৮ : ৫ পদ ) । সে তো প্রেরিত ১৬ : ৩০ পদে উল্লেখিত জেল রক্ষকের মত আর্ত চিৎকার করে বলে ওঠে, “পাপ থেকে উদ্ধার পাবার জন্য আমাকে কি করতে হবে ?” যখন একজন তার হৃদয়ের মন্দতা চিহ্নিত করে, তখন সে তার হৃদয়ের গভীর থেকে আর্তস্বর বের করে, “ হে ঈশ্বর ! আমি পাপী ; আমার প্রতি করুণা কর” ( লূক ১৮ : ১৩ পদ ) ।
ঈশ্বরের বাক্য আশার সঞ্চার করে এবং পাপ সম্পর্কে দোষী করে । এটি আলোর মত এসে অন্ধকার হৃদয়ের গভীরে প্রবেশ করে । এই উজ্জ্বলতা এবং ঈশ্বরীয় বাক্যের ক্ষমতা শয়তানকে ও তার সকল গর্বিত, জঘন্য অশুচি আত্মাদের এই হৃদয় থেকে তাড়িয়ে দেয় । আর সে, অর্থাৎ শয়তান যখন মন্দ আত্মাদের সাথে সাথে পিছু হটতে থাকে, তখনও সে মহা - পরাক্রমী পবিত্র আত্মাকে প্রতিরোধ করতে থাকে । সে এইরকম হৃদয়ের গভীরে লুকিয়ে বিশ্রাম করতে ও ঈশ্বরের চোখের আড়ালে অনেক পাপকে ঢেকে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যায় ।
এই হৃদয় যখন নম্রতায় তার উদ্ধারকর্তা যীশুর আলিঙ্গনে জড়িয়ে পড়ে, তখন হঠাৎ করে সে ক্রুশও দেখতে পায় যা একক ভাবে তার কাছে খুব লজ্জার বিষয় : কিন্তু তবু তা এক উজ্জ্বল চমক ! সে তো দেখতে পায়, ঈশ্বরের পুত্র রক্তাক্ত ও আহত অবস্থায় ক্রুশের উপরে ঝুলছেন । তাঁর কাপড় খুলে নেওয়া হয়েছে, যা অতি লজ্জাজনক, এবং তিক্ত কটু কথা ; আর তাঁকে উঁচুতে তুলে ধরা হয়েছে যেন সারা পৃথিবী তাঁকে দেখতে পায় । যদিও তিনি নির্দোষ ও খাঁটি, তবু দুজন চোরের মাঝখানে তিনি ঝুলছেন । “তাঁকে পাপীদের সঙ্গে গোনা হয়েছিল” ( যিশাইয় ৫৩ : ১২ পদ ) । কষ্টভোগকারী পাপী ক্রুশের উপর থেকে কথা শোনে, “পিতা, এদের ক্ষমা কর, কারণ এরা কি করছে তা জানে না” ( লূক ২৩ : ৩৪ পদ ) ।
“ আমি তো এই লোকটির কোন দোষই দেখতে পাচ্ছি না” ( লূক ২৩ : ৪ পদ ) । একটি অনুতাপী হৃদয়ের আর্তস্বর, “এটা তো আমার পাপ, আমার ঘৃণ্য হৃদয় মৃত্যুর উপযুক্ত ও অনন্ত নরকের উপযুক্ত, আমি তো অতি জঘন্য এবং ক্রুশে মৃত্যুর উপযুক্ত । তাহলে কেন তিনি আমার জন্য মৃত্যুকে বরণ করে নিলেন ?”
“আমার পাপের জন্যই তাঁকে বিদ্ধ করা হয়েছে; আমাদের অন্যায়ের জন্য তাঁকে চুরমার করা হয়েছে । যে শাস্তির ফলে আমাদের শান্তি এসেছে সেই শাস্তি তাঁকেই দেওয়া হয়েছে; তিনি যে আঘাত পেয়েছেন তার দ্বারাই আমরা সুস্থ হয়েছি “ ( যিশাইয় ৫৩ : ৫ পদ ) । ফিসফিসিয়ে বলা পবিত্র আত্মার সান্তনার রব শুনুন, ‘ঈশ্বরের একমাত্র পুত্রের মৃত্যুবরণ ও কষ্ট ভোগের মধ্য দিয়ে আপনার পাপসমূহের বিচার হয়েছে’ । “ যে লোক নম্র, যার মন ভেঙ্গে চুরমার হয়েছে এবং যে আমার কথায় কাঁপতে থাকে তাকে আমি ভাল চোখে দেখব” ( যিশাইয় ৬৬ : ২ পদ ) । এই হচ্ছে কাঁপতে থাকা হৃদয়ের জন্য সান্তনা, যা গভীর দুঃখে ডুবে আছে এবং যা ক্রুশতলে অনুশোচনারত । শয়তানের অধিকার ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে । একটি নতুন হৃদয় সৃষ্টি হচ্ছে এবং স্বর্গ থেকে ঈশ্বর পিতা কর্তৃক শান্তি দেওয়া হচ্ছে ।
একটি নতুন হৃদয়
“যারা খ্রীষ্ট যীশুর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ঈশ্বর তাদের আর শাস্তির যোগ্য বলে মনে করবেন না । জীবনদাতা পবিত্র আত্মার নিয়মই খ্রীষ্ট যীশুর মধ্য দিয়ে আমাকে পাপ ও মৃত্যুর নিয়ম থেকে মুক্ত করেছে” ( রোমীয় ৮ : ১ - ২ পদ ) । এক পরিপূর্ণ শান্তি দেওয়া হয়েছে । পাপে পূর্ণ জীবন থেকে মুক্ত হয়ে পবিত্রতায় পূর্ণ জীবন শুরু হয়েছে । পাপ স্বীকার করে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করা হয়েছে । এই হৃদয়ে এখন জগৎ ও তার সব মিথ্যাকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছে ( গালাতীয় ৬ : ১৪ পদ ) । এখন আমাদের এই ছবিতে দেখানো কপোত রূপে বাসকারী পবিত্র আত্মা এই হৃদয়কে সমস্ত সত্যে পরিচালনা দিতে এসেছেন ( যোহন ১৬ : ১৩ পদ ) । ঈশ্বরের বাক্য সদৃশ দুগ্ধ গ্রহণ এই হৃদয়ের সত্যিকার আকাঙ্ক্ষা ( ১ পিতর ২ : ২ পদ ) । আর পবিত্র আত্মার ফলগুলো, যেমন - ভালবাসা, আনন্দ, শান্তি, সহ্যগুন , দয়ার স্বভাব, ভাল স্বভাব, বিশ্বস্ততা, নম্রতা ও নিজেকে দমন এই হৃদয়ে স্পষ্ট দেখা যায় ( গালাতীয় ৫ : ২২, ২৩ পদ ) ।
ভেড়ার পাল যেমন রাখাল কর্তৃক পরিচালিত হয় , তেমনি করে এই নতুন হৃদয় জলের ধারে পরিচালিত হবে ( গীতসংহিতা ২৩ অধ্যায়) । পবিত্র আত্মার কাছ থেকে পাওয়া বুঝবার শক্তি নতুন জন্ম প্রাপ্ত খ্রীষ্টিয়ানকে তার জীবনে ও তার সহগামীদের জীবনে বাধ্যতা ও অবাধ্যতার পার্থক্য নির্ণয় করতে শেখায় । সে তো খ্রীষ্টের নাম নিয়ে আসা অনেকের কথা শোনে, যদিও তারা
একটি নতুন হৃদয়
মন্দতা থেকে সরে আসতে পারছে না ( ২ তীমথিয় ২ : ১৯ পদ ); তাদের কাছ থেকে তাকে সরে আসতে হয় । কারণ, সে তো ঈশ্বরের বাক্য পড়াশোনা করে এবং তাঁর সকল শিক্ষাকে জড়িয়ে ধরে রাখতে লজ্জা বোধ করে না । তার স্বাধীন জীবনে সাহস দেখা যায় ; আর যা কিছু সে শুনেছে, দেখেছে ও অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে তা নিয়ে কথা বলতে সে তো লজ্জাবোধ করে না ( প্রেরিত ৪ : ২০ পদ ) ।
এই নতুন হৃদয় ক্রমাগত শুচি হবার প্রয়োজন অনুভব করে এবং প্রাচীন গীত রচয়িতার মতই প্রার্থনা করে, “ হে ঈশ্বর, তুমি আমাকে ভাল করে পরীক্ষা করে দেখ, আর আমার অন্তরের অবস্থা জেনে নাও । তুমি দেখ আমার মধ্যে এমন কিছু আছে কি না যা দুঃখ দেয়” ( গীতসংহিতা ১৩৯ : ২৩ - ২৪ পদ ) ।
পবিত্র আত্মা এই হৃদয়ের বিভিন্ন অংশ পরিশুদ্ধ করে ; যা কিছু বাধা জনক আছে তাও সরিয়ে দেয়, যেন আরও অনেক মূল্যবান ফল সে উৎপন্ন করতে পারে ( যোহন ১৫ : ২ পদ ) । বিশুদ্ধ হবার কাজে সে তো সমর্পিত থাকে এবং এও জানে যে খ্রীষ্টকে ছাড়া সে কিছুই করতে পারে না ।
তার ক্রুশবিদ্ধ হওয়া ও পুনরুত্থিত হওয়া প্রভু সব সময় তার সামনে উপরে এবং উচ্চীকৃত । খ্রীষ্টই হচ্ছে তার জীবনের প্রধান আনন্দ এবং সে তাঁকে খুশি করতে চেষ্টা করে, যিনি তাকে এই নতুন জীবন দান করেছেন ।
ঈশ্বরের শক্তিকে ধরে রাখতে এই হৃদয়ে রয়েছে দৃঢ় প্রত্যয় । যীশু বলেছেন, “ আমার মেষগুলো আমার ডাক শোনে । আমি তাদের জানি আর তারা আমার পিছনে পিছনে চলে । আমি তাদের অনন্ত জীবন দিই । তারা কখনও বিনষ্ট হবে না এবং কেউই আমার হাত থেকে তাদের কেড়ে নেবে না “ ( যোহন ১০ : ২৭ - ২৮ পদ ) । যতদিন পর্যন্ত সে তার রাখালের রব শোনে এবং তাঁকে অনুসরণ করে ততদিন পর্যন্ত সে সুরক্ষিত । এমন কি শয়তানও তাকে ঈশ্বরের হাত থেকে নিয়ে নিতে পারে না ।
তার প্রতি নির্দেশ থাকে যেন সে জেগে থাকে ও প্রার্থনা করে, কারণ তারই পুরানো কামনা ও আকাঙ্ক্ষা দিয়ে শয়তান তাকে প্রলোভিত করবে । কোন কোন সময় শয়তান গর্জনকারী সিংহের মত করে আসবে যেন এই হৃদয়ের উপরে তার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারে । আবার অন্য সময় সে আবার উজ্জ্বল স্বর্গদূতদের বেশে এসেও ভুল পথে চালাতে চেষ্টা করে । যদি সে শয়তানের পরামর্শ গ্রহণ করে, তাহলে শয়তান তাকে রাখালের কাছ থেকে দূরে নিয়ে যায় । শয়তানের লক্ষ্য হচ্ছে চুরি করা, খুন করা এবং ধ্বংস করা । তবুও যাই হোক, যেমন করে এই হৃদয় ঈশ্বরের কাছে নিজেকে সমর্পণ করেছে এবং শয়তানকে প্রতিহত করেছে, তাতে শয়তান পালিয়ে যেতে বাধ্য । যেহেতু এই হৃদয় তার রাখালের কণ্ঠস্বর শোনে ও তাঁকে অনুসরণ করে; আর এতে সে সুরক্ষিত থাকে ।
বিপথগামী হৃদয় ও তার শেষ পরিণতি
এ রকম হৃদয় হচ্ছে একটি দুঃখজনক পরিণতি । ক্রমশ, শয়তানের ঠকামির মধ্য দিয়ে পাপ, অসচেতনতা ও অবহেলা আবার ফিরে আসে এবং এই হৃদয়ে বাসকারী নম্র ভদ্র অনুগ্রহের আত্মা সেখান থেকে বের হয়ে যেতে শুরু করে । শয়তান ও তার মন্দ আত্মাগুলো, যারা ঈশ্বরের উপস্থিতিতে বাইরে বের হয়ে গিয়েছিল, তারা আবার সব রকম মন্দতা নিয়ে ফিরে আসে । একটি দৃষ্টান্তে এখানে দেখানো হয়েছে যে, তারা ছবিতে দেখানো কপোত ও মেষ - শিশুর শান্তিময় আশীর্বাদ হৃদয় থেকে বের করে দেয় । কিন্তু এখন আবার এই হৃদয় তার উদ্ধারকর্তার কাছ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে ও তার নিজের জন্য চেয়ে নেওয়া ঈশ্বরের অনন্তকালীন প্রতিজ্ঞা সমূহ ত্যাগ করতে চাচ্ছে ।
বিশ্বস্ত বাধ্যতায় ও অধ্যবসায় সহকারে জেগে থাকার মধ্য দিয়ে এই খ্রীষ্টিয়ান কিন্তু তার নতুন জীবনকে ধরে রাখতে পারত । এখনও হয়তো বা তার আত্মিক ভাইয়েরা তাকে সতর্ক করে দেয় ।
“হে ঘুমন্ত লোক, জাগো” ( ইফিষীয় ৫ : ১৪ পদ ) বার বার করে পবিত্র আত্মা এইভাবে ডাকছেন । কিন্তু বিপথগামী হৃদয় তবু ঘুমের ঘোরে থাকে ।
শয়তানের হাত ঈশ্বরের সন্তানকে দোলনাতে ধরে রেখে দোল দিয়ে ঘুম পাড়ায় ; তার উদ্দেশ্য থাকে যেন এই সন্তান আর কখনও না জাগে । জীবনকে দেখাশোনা
বিপথগামী হৃদয়
করার মাধ্যমে, অথবা অর্থ সম্পদের মিথ্যা মোহে , যৌবনের কামনা এবং বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে , প্রতিদিনের প্রার্থনার অবহেলা, অথবা ঈশ্বরের বাক্য গ্রহণ বন্ধ করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে পরীক্ষক বা শয়তান মিথ্যা ও প্রতারণামূলক ছলনায় একজনের জীবনে প্রবেশ করতে পারে ।
প্রথমে খ্রীষ্টিয়ান জীবনের বাইরের নিয়ম - নীতি সে তো মেনে চলে । বিপথগামী খ্রীষ্টিয়ান গীর্জায় যায়, শাস্ত্র সম্পর্কিত আলোচনায় অংশ নেয়, ফাঁকা প্রার্থনার জন্য অবনত হয় এবং আত্মসাক্ষ্যও দেয় । কিন্তু ক্রমশঃ ও নিশ্চিত ভাবে গর্ব ও অবহেলার মত পাপের মন্দ বিষয়গুলো এই হৃদয়কে শক্ত করে ফেলে । জাগতিক বন্ধু-বান্ধবেরা বেশি প্রাধান্য পায়, চকচকে ও অসার আনন্দ - স্ফূর্তি ও ভোগ বাসনা তাকে আকর্ষিত করে । বোকামি ও অনৈতিক আলোচনা এবং হাসি - কৌতুক বেশি করে প্রভাব বিস্তার করে থাকে । এক সময়ের পরিষ্কার বিবেক - বুদ্ধি অসার হয়ে যায় এবং বিবেকের কোন অনুযোগ বা উপদেশ কানে ঢোকে না, কিন্তু মন্দ আনন্দ - স্ফুর্তির জন্য দরজা খুলে যায় । চিন্তা - ভাবনার মধ্যে তিক্ততা, অসন্তোষ , হিংসা এবং ক্ষমাহীনতা পুনরায় কর্তৃত্ব করে ও প্রমাণ করে যে কর্তৃত্বপরায়ন অহংকারী আত্মা আবার উঠে এসেছে । পূর্বেকার কামনা - বাসনা ও মাংসিক জীবন - যাপন করার জন্য আমন্ত্রণ জানায় এবং হৃদয়ে প্রবেশ করে, যে হৃদয় ছিল এক সময় পরিষ্কার ও খাঁটি । এই রকম পতিত অবস্থায় মধ্যে, এই পতিত ব্যক্তির নিজের সাধুতা কল্পনার ফাঁদে আটকা পড়ে এবং নিজের মধ্যে এরকম প্রার্থনা বের হয়, “ হে ঈশ্বর, আমি তোমাকে ধন্যবাদ দিয়ে যে, আমি অন্য লোকদের মত ঠগ, অসৎ ও ব্যভিচারী নই” ( লূক ১৮ : ১১ ক অংশ ) । সে তো এই জগতের পথে ফিরে এসেছে এবং তার হৃদয় এমন ভাবে হারিয়ে গেছে, মনে হয় যা কখনও যীশুকে গ্রহণ করে নি ।
পালক যীশু খুবই সচেতন ভাবে এই হৃদয়কে পর্যবেক্ষণ করেন । তিনি জীবন - ঝড়ের মধ্যে পড়া এই মেষকে খুঁজতে বের হন । তিনি সন্ধ্যাবেলা তার মেষদের সংখ্যা গোণেন, দেখেন একটি এখনও ফিরে আসে নাই । তবু তার প্রতি তাঁর ভালবাসা থেমে থাকে না । তিনি গভীরভাবে অনুরোধ করতে থাকেন, “ ফিরে এসো, আমি তো তোমার জন্য আমার রক্ত ঝরিয়েছি !”
ক্রুশ হয়ে যায় অসন্তোষের কারণ এবং নিজেকে আর অস্বীকার করা যায় না । ঈশ্বরের সন্তানদের পথ সমূহ ও তাদের সহভাগিতাকে অতি ক্ষুদ্র মানসিকতা ও কম দামী মনে হয় । তবু, ‘ পবিত্র আত্মা এবং কনে বলেছেন, “এস” ( প্রকাশিত বাক্য ২২ : ১৭ ক অংশ ) । ঈশ্বরের সংশোধনকারী হাত বিভিন্নভাবে অনুভব করা যায়, পাপের জন্য দুঃখবোধের পরিবর্তে সে হৃদয়ের ইচ্ছার প্রতি দরদ দেখায় । যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস দ্বারা ধার্মিক গণিত হওয়ার স্থান দখল করে নেয় নিজস্ব বিচার বিবেচনা ও অজুহাত ।
মিথ্যা ও অবিশ্বাসী রাখালেরা এইরকম হৃদয়কে আরামের ঘুম পাড়িয়ে রাখে ও সান্ত্বনা দেয়, এবং আগেকার উপভোগ করা পাপসমূহ এই হৃদয়ে এলে পর তা থেকে সে উদ্ধারও পেতে চায় না ।
অশুচি আত্মা , যা একদা চলে গিয়েছিল, তা আবার তার এই ঘরে ফিরে আসে । “তখন সে গিয়ে নিজের চেয়েও খারাপ অন্য আরও সাতটা মন্দ আত্মা সঙ্গে করে নিয়ে আসে এবং সেখানে ঢুকে বাস করতে থাকে । তার ফলে সেই লোকটার প্রথম দশা থেকে শেষ দশা আরও খারাপ হয়” ( লূক ১১ : ২৬ পদ ) ।
এইরকম অবস্থা কতটা ঘৃণ্য ও অসহায় সে তো ভাবা যায় না ! এতে করে আগে যে পাপগুলো সে উপভোগ করত, তা এখন আর সন্তোষজনক মনে হয় না । কিন্তু ঈশ্বরের অনুগ্রহ অনুশোচনা করার জন্য তাকে এখনও ডাকতে থাকেন ।
ওহ, পতিত হৃদয় ! আপনার হৃদয়ে বলুন, “ আমি উঠে আমার বাবার কাছে গিয়ে বলব, বাবা, ঈশ্বর ও তোমার বিরুদ্ধে আমি পাপ করেছি” ( লূক ১৫ : ১৮ পদ ) । তাড়াতাড়ি করুন, কারণ আজই হচ্ছে উদ্ধার পাবার দিন ; হৃদয়কে কঠিন করবেন না, কারণ “জীবন্ত ঈশ্বরের হাতে পড়া কি ভয়ংকর ব্যাপার” ( ইব্রীয় ১০ : ৩১ পদ ) । খ্রীষ্ট যীশুর মধ্য দিয়ে আসা ঈশ্বরের দয়া বার বার প্রত্যাখ্যান করবেন না । দয়া পাবার দরজা খোলা থাকতে থাকতে উদ্ধার পাবার সুযোগ তাড়াতাড়ি গ্রহণ করুন ।
সময় খুব দ্রুত চলে যাচ্ছে । পাপী হৃদয় ক্রমে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে । তার দেহ হতে পারে ব্যথায় ভরা , আর হৃদয়ে পূর্ণ হয়েছে ভয় । জমা করে রাখা সম্পদ আর তো ভোগ করা যাচ্ছে না । আনন্দ - স্ফূর্তির সময়ে পাওয়া বন্ধু - বান্ধব এখন অনুপস্থিত । মন্দতায় পূর্ণ পাপ অভ্যাস নিরবে দাঁড়িয়ে দোষারোপ করছে । ঈশ্বরের অনন্তকালীন আইন - কানুন অর্থাৎ দশ আজ্ঞা মৃত্যুর মুহূর্তে সরল ও সুস্পষ্টভাবে বলে যাচ্ছে । ঈশ্বরের রব আর একবার বলছে, “ আমার আত্মা চিরকাল ধরে মানুষকে চেতনা দিতে থাকবেন না” ( আদি পুস্তক ৬ : ৩ ক পদ ), এর পরে আর হয়তো এ কথা শোনা যাবে না ।
বিপথগামী হৃদয়ের চূড়ান্ত পরিণতি
ঈশ্বরের আত্মা চূড়ান্ত ভাবে সাক্ষ্য দিয়ে জীবিতদের কাছে বলেন, “ কেননা এটাই তো পাপের পরিণতি ।” একটি পাপী হৃদয় তার মৃত্যুর সময় কতটা ভয়ংকর , কারণ তার তো কোন আশা নেই , কোন উদ্ধারকর্তা নেই, আলো নেই ; আছে শুধু অন্ধকার এবং চরমতম হতাশা । যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘষে কান্নাকাটি এবং জলন্ত আগুন তার জন্য অপেক্ষমান । ( মথি ১৩ : ৪২ পদ ) । নরকের এই শাস্তি সকল পাপীদের জন্যই অপেক্ষা করছে, যদি তারা কখনও পাপ থেকে না ফেরে অথবা পতিত হৃদয়ের মত পুনরায় পাপে ফিরে যায় । “ প্রত্যেক মানুষ একবার মরবে এবং তার পরে তার বিচার হবে “ ( ইব্রীয় ৯ : ২৭ পদ )।
বিপথগামী হৃদয় ও তার শেষ পরিণতি
দশ আজ্ঞা
বিজয়ী হৃদয়ের ঘরে ফিরে আসা
এটি হচ্ছে বিজয়ী হৃদয় । এর উদ্দেশ্য হচ্ছে ঈশ্বরের ইচ্ছামত চলা, যিনি তাঁর রাজ্যের ও মহিমার ভাগী হবার জন্য তাকে ডেকেছেন ( ১ থিষলনীকীয় ২ : ১২ পদ ) । নতুন জন্মের ফলে পরিবর্তিত ঈশ্বরের এই সন্তান প্রতিদিন উদ্যোগী হয়ে সহজেই ঘেরাও করতে পারে এমন সব পাপ ও বোঝাবার এক পাশে ঠেলে দিয়ে যীশুর দিকে লক্ষ্য রেখে ধৈর্য পূর্বক জীবনের পথে দৌড়ায়, যিনি হচ্ছেন তার বিশ্বাসের ভিত্তি ও পূর্ণতা ( ইব্রীয় ১২ : ১, ২ পদ ) ।
শয়তান তার মহা শক্তি নিয়ে খুব কাছাকাছি থাকে, কিন্তু খ্রীষ্টিয়ানের রয়েছে শান্তি ও নিরাপত্তা, কারণ সে ঈশ্বরের তত্ত্বাবধানে রয়েছে ( ১ পিতর ১ : ৫ পদ ) ।
নির্দিষ্ট সময়ে তাদের জীবনে পরীক্ষা উপস্থিত হবে । ঈশ্বরের সন্তানকে মহা কষ্ট ভোগ করতে হতে পারে, প্রিয়জনদের দ্বারা অত্যাচার ভোগ, এমন কি নিজের লোকদের দ্বারাও অবজ্ঞাত ও পরিত্যক্ত হতে পারে । এই রকম সময়ে খ্রীষ্টের ক্রুশ এবং তাঁর যন্ত্রণা ও কষ্ট প্রায় ঝেড়ে ফেলে দেবার প্রলোভন এ জীবনে আসতে পারে । তখন এই তীর্থযাত্রীর চোখে পড়বে চকচকে চওড়া রাস্তার স্বচ্ছন্দ পথ ও কানে আসবে উচ্ছাসধ্বনি । আরাম - আয়েসে, পূর্ণ ভালবাসায় দেহ প্রলোভিত হবে, যা বলে দেবে অতিরিক্ত স্বাধীনতার পথ । শয়তানের ইচ্ছা যেন এই হৃদয় তার অতীতের দাসত্ববন্ধন ভুলে যায়, পিছন
বিজয়ী হৃদয়ের ঘরে ফিরে আসা
ঈশ্বর মানুষকে এত ভালবাসলেন
যে, তাঁর একমাত্র পুত্রকে তিনি
দান করলেন …………
ফিরে তার মাংসিক ও অসংযমী জীবনের দিকে তাকায় । পবিত্র আত্মা কিন্তু সাবধানবাণী উচ্চারণ করে এ কথা বলেন, “ লাঙ্গলে হাত দিয়ে যে পিছনে দিকে তাকিয়ে থাকে সে ঈশ্বরের রাজ্যের উপযুক্ত নয়” ( লূক ৯ : ৬২ পদ ) ।
রাখাল তাঁর নিজের মেষ হিসাবে এই হৃদয়কে সব সময় পরিচালিত করছে, নিয়ে যাচ্ছে সবুজ ঘাসের মাঠে এবং শান্ত জলস্রোতের কাছে । এই হৃদয় যখন দুর্দশাগ্রস্ত ও পরীক্ষার মধ্য থেকে বের হয়ে আসে , তখন কত বার সে এই শান্ত নির্জনে ফিরে আসে, যেখানে এসে তার প্রাণ বিশ্রাম পায় ( গীতসংহিতা ২৩ অধ্যায় )। তার শত্রুদের মধ্যেও যখন তার সামনে খাবারে সাজানো টেবিল থাকে ; যদিও সে ঘৃণিত তবু সে তাদের ভালবাসতে পারে ও তাদের জন্য প্রার্থনা করতে পারে ( মথি ৫ : ৪৪ পদ ) । তার প্রাণের পরিবর্তে এর চেয়ে বেশি কিছু তো সে পেতে চায় না । কারণ যীশুকে দেখতে পাওয়াই তার একান্তই ইচ্ছা ।
ঈশ্বরের বাক্যের পরামর্শ মাধ্যমে প্রজ্ঞা ও অনুগ্রহ পেয়ে এই হৃদয় ঈশ্বরের সন্তানদের খোঁজ করে । সে যখন খ্রীষ্টের দেহ অর্থাৎ জীবন্ত ঈশ্বরের মন্ডলীর দেখা পায়, যারা শাস্ত্রীয় নিয়মে জল দ্বারা বাপ্তিস্ম দেয়, যারা সঠিক ও নিখুঁত মতবাদ শিক্ষা দেয় ও পালন করে তখন এই প্রাণের আকাঙ্ক্ষা পরিতৃপ্ত হয় ( ১ করিন্থীয় ১২, প্রেরিত ২ : ৪১ পদ ) । খ্রীষ্টের পক্ষে একজন রাজদূত হিসাবে মহান সুসমাচার ভালবেসে প্রচার করা ঈশ্বরের সন্তানের কাছে মহা আনন্দের বিষয় । সে তো জলের ধারে লাগানো গাছের মত, যা সময়মত ফল দেয় ( গীতসংহিতা ১ : ১ - ৩ পদ ) । তার এই বিবেকে অসন্তোষ থাকে না, সেজন্য এ জীবনে সে হয় স্বাধীন ও আশীর্বাদপ্রাপ্ত । এতে খাঁটি ভালবাসা সমস্ত ভয় দূর করে দেয় ( ১ যোহন ৪ : ১৮ পদ ) । যে হৃদয় যীশুর পদচিহ্ন অনুসরণ করে থাকে পৃথিবীর কোন ভাষা এই হৃদয়ের আনন্দ ও মহিমা বর্ণনা করতে ব্যর্থ ।
বিশ্বাসে একজন খ্রীষ্টিয়ান ঈশ্বরের সৃষ্ট ও গেঁথে তোলা সুন্দর শহরটি আগে থেকে দেখতে পায় । ঈশ্বরকে যারা ভালবাসে, তিনি তো তাদের জন্য এটা সৃষ্টি করেছেন । একজন খ্রীষ্টিয়ান শুনতে পায়, যীশু বলছেন, “ তোমাদের মন যেন আর অস্থির না হয় … … আমার পিতার বাড়ীতে থাকবার অনেক জায়গা আছে … … আমি তোমাদের জন্য জায়গা ঠিক করতে যাচ্ছি ।
আমি … … আবার আসব আর আমার কাছে তোমাদের নিয়ে যাব, যেন আমি যেখানে থাকি তোমরাও সেখানে থাকতে পার” ( যোহন ১৪ : ১ - ৩ পদ ) । একজন খ্রীষ্টীয়ান প্রেরিত পৌলের সাথে একাত্ম হয়ে বলতে পারে, “ মৃত্যু ধ্বংস হয়ে জয় এসেছে। মৃত্যু, তোমার জয় কোথায় ? মৃত্যু তোমার হুল কোথায় “ ( ১ করিন্থীয় ১৫ : ৫৪ - ৫৫ পদ ) ? এটি তো তার জন্য সান্ত্বনার কারণ ; সে যখন মনে করে যে যীশু বলেছেন, “ আমিই পুনরুত্থান ও জীবন । যে আমার উপর বিশ্বাস করে সে মরলেও জীবিত হবে । আর যে জীবিত আছে এবং আমার উপর বিশ্বাস করে সে কখনও মরবে না “ ( যোহন ১১ : ২৫ - ২৬ পদ ) ।
মানুষ মাত্রই মরণশীল, তাকে অবশ্যই মরতে হবে । ঠিক একইভাবে এই বিজয়ী হৃদয়কে শীঘ্রই এই পৃথিবীর জীবন ছেড়ে যেতে প্রস্তুত থাকতে হবে । সে নিজে হয়তো বা এভাবে মৃত্যুর অভিজ্ঞতা পেতে চায় না, কিন্তু তবু তার সামনে অপেক্ষা করে থাকা অনন্ত জীবনের আনন্দের দিকে তাকিয়ে সে তো অপেক্ষা করে ।
তার জীবনে শান্তি ও নীরবতা স্বাভাবিক বিষয়, যা তার বিছানার পাশে শেষ মুহূর্তের পৃথিবীর জীবনকে ঘিরে থাকে । তার বিদায়ের সময়, একটি নিশ্চয়তা থাকে, একটি সাক্ষ্য থাকে যে, খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে তার মুক্তির ফলে সে তো এখন পেতে যাচ্ছে জীবন মুকুট ।
যে বিশ্বাস তার এই জীবনে শক্তি যোগায়, মৃত্যুতেও তা তাকে ছেড়ে যাবে না, কারণ অনন্তকালীন ঈশ্বরের পুত্রের সাথে সে তো নোঙর বেঁধেছে । এই হৃদয়কে বয়ে নিয়ে যেতে যীশু তো তাঁর স্বর্গদূতদের পাঠিয়ে দেবেন ( লূক ১৬ : ২২ পদ ) ।
প্রেরিত যোহন পাটমস দ্বীপে থাকাকালে দর্শন পেয়েছিলেন। তিনি দেখেছিলেন, “ এর পরে আমি প্রত্যেক জাতি, বংশ, দেশ ও ভাষার মধ্য থেকে এত লোকের ভিড় দেখলাম যে, তাদের সংখ্যা কেউ গুনতে পারল না … … … সাদা পোশাক পরে তারা সেই সিংহাসন ও মেষ - শিশুর সামনে খেজুর পাতা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল । তারা জোরে চিৎকার করে বলছিল: যিনি সিংহাসনে বসে আছেন, আমাদের সেই ঈশ্বর এবং মেষ - শিশুর হাতেই পাপ থেকে উদ্ধার রয়েছে” । তাকে আরও বলা হয়েছিল, “ সেই মহাকষ্টের মধ্য থেকে যারা এসেছে এরা তারাই । এরা এদের পোশাক মেষ - শিশুর রক্তে ধুয়ে সাদা করেছে । … … … এদের আর খিদে পাবে না, পিপাসাও পাবে না; কারণ সেই মেষ - শিশু … … … এদের রাখাল হবেন । জীবন্ত জলের ফোয়ারার কাছে তিনি এদের নিয়ে যাবেন , আর ঈশ্বর এদের চোখের জল মুছে দেবেন” ( প্রকাশিত বাক্য ৭ : ৯ - ১৭ পদ ) ।
জীবনে এর চেয়ে বেশী কিছু কি চাওয়ার আছে ? স্বর্গ কি ইশারায় ডাকছে ? ভালবাসার কেউ কি স্বর্গের দরজায় অপেক্ষারত ? যোহনের দেখা অনেক লোকের ভিড়ের মধ্যে আপনিও কি থাকতে ইচ্ছা করেন না ? যীশু তো এখনও আপনার হৃদয় দরজায় দাঁড়িয়ে আছেন ? “ দেখ, আমি দরজায় দাঁড়িয়ে ঘা দিচ্ছি । কেউ যদি আমার গলার আওয়াজ শুনে দরজা খুলে দেয় তবে আমি ভিতরে তার কাছে যাব এবং তার সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করব, আর সে - ও আমার সঙ্গে খাওয়া - দাওয়া করবে” ( প্রকাশিত বাক্য ৩ : ২০ পদ ) । আসুন ! এখুনি আসুন ! এর পরে হয়তো বা তাঁর গলার স্বর আর শুনতে পাবেন না ।