উদ্ধার পাবার জন্য আমাকে কি করতে হবে ? এখন আমি কিভাবে মনের শান্তি অর্জন করতে পারি এবং আগামীতে স্বর্গে যাবার নিশ্চয়তা পেতে পারি ? এই প্রশ্নগুলির উত্তর পেতে হলে ঈশ্বরের কাছে আমাদের আসতে হবে । এখন , ঈশ্বর সম্পর্কে বাইবেল কি বলে এবং কেমন করে উদ্ধার পাওয়া যায়, তা এখানে বলছি ।
ঈশ্বর হচ্ছেন মহা বিশ্বের একমাত্র সৃষ্টিকর্তা - তিনি একজন স্নেহশীল পিতা, যিনি তাঁর সন্তানদের ভালবাসেন এবং তাদের কাছ থেকে ভক্তি ও বাধ্যতা আশা করেন । তারা অবাধ্য হলে তিনি শাসন করেন, আবার অনুতাপ করে ফিরে আসলে তিনি ক্ষমাও করে দেন ।
ঈশ্বর হচ্ছেন
সৃষ্টিকর্তা - সৃষ্টির শুরুতেই ঈশ্বর মহাকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করলেন ( আদি পুস্তক ১ : ১ পদ ) । প্রকাশিত বাক্য ৪ : ১১, ইব্রীয় ১১ : ৩ এবং কলসীয় ১ : ১৬ - ১৭ পদ দেখুন ।
প্রেমময় - অশেষ ভালবাসা দিয়ে আমি তোমাদের ভালবেসেছি (যিরমিয় ৩১ : ৩ পদ ) । যাত্রাপুস্তক ৩৪: ৬, ১ যোহন ৪ : ৮ এবং রোমীয় ৫ : ৮ পদ দেখুন । পবিত্র - সেইজন্য আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৌরব কর; তাঁর পবিত্র পাহাড়ের সামনে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাও , কারণ আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু পবিত্র ( গীতসংহিতা ৯৯ : ৯ পদ ) ।
১ শমূয়েল ২ : ২ এবং যাত্রাপুস্তক ১৫ : ১১ পদ দেখুন ।
ধার্মিক - সদাপ্রভু ন্যায়বান বলেই ন্যায়ের কাজ তিনি ভালবাসেন (গীতসংহিতা ১১ : ৭ ক পদ ) । প্রকাশিত বাক্য ১৫ : ৩ , গীতসংহিতা ১৪৫ : ১৭ এবং প্রেরিত ১৭ : ৩১ পদ দেখুন ।
ঈশ্বর আপনার সাদৃশ্যে মানুষ সৃষ্টি করে তাকে স্বাধীন ইচ্ছা দিলেন - এমন স্বাধীন ইচ্ছা দিলেন যে মানুষ তাঁর আদেশ পালন করতেও পারে আবার নাও পারে । মানুষের স্বভাবের মধ্যে অবাধ্যতা স্বাভাবিকভাবেই রয়েছে এবং এটাই হচ্ছে পাপ । সেজন্য, সঠিক সিদ্ধান্ত নেবার ব্যাপারে ঈশ্বর আমাদের দায়ী করেন ।
মানুষ হচ্ছে
ঈশ্বরের মত করে গড়া - পরে ঈশ্বর তাঁর মত করেই মানুষ সৃষ্টি করলেন ( আদিপুস্তক ১ : ২৭ পদ ) ।
স্বাভাবিকভাবে পাপ করতে ইচ্ছুক - কারণ সবাই পাপ করেছে এবং ঈশ্বরের প্রশংসা পাবার অযোগ্য হয়ে পড়েছে ( রোমীয় ৩ : ২৩ পদ ) ।
রোমীয় ৫: ১২ , ১ যোহন ১ : ৮, যাকোব ১ : ১৪ -১৫ এবং গালাতীয় ৫ : ১৯ - ২১ পদ দেখুন ।
ঠকামির অধীন - একটা পথ আছে যেটা মানুষের চোখে ঠিক মনে হয়, কিন্তু সেই পথের শেষে থাকে মৃত্যু ( হিতোপদেশ ১৪ : ১২ পদ ) যিরমিয় ১৭ : ৯ পদ দেখুন ।
ঈশ্বরের কাছ থেকে আলাদা - কিন্তু তোমাদের অন্যায় সদাপ্রভুর কাছ থেকে তোমাদের আলাদা করে দিয়েছে ( যিশাইয় ৫৯ : ২ ক পদ ) ।
ঈশ্বরের ধার্মিকতা পাপকে উপেক্ষা করে না
প্রত্যেককেই তার নিজের পাপের জন্য মরতে হবে ( দ্বিতীয় বিবরণ ২৪ : ১৬ খ পদ ) ।
রোমীয় ১৪: ১২ পথ দেখুন ।
পাপের শাস্তি অবশ্যই মৃত্যু - যে পাপ করবে সে - ই মরবে (যিহিষ্কেল ১৮ : ৪ পদ ) ।
রোমীয় ৬ : ২৩ , যাকোব ১ : ১৫ এবং মথি ২৫ : ৩১ - ৩৩ পদ দেখুন ।
পাপীদের জন্য শাস্তি প্রস্তুত করা হয়েছে - যাদের নাম সেই জীবন - বইতে পাওয়া গেল না, তাদেরও আগুনের হ্রদে ফেলে দেওয়া হলো (প্রকাশিত বাক্য ২০ : ১৫ পদ ) ।
মথি ৩ : ৭, মথি ১৩ : ৪০ - ৪২, মথি ২৫ : ৪১, মার্ক ৩ : ২৯, মার্ক ১৬ : ১৬ , লূক ৩ : ১৭, লূক ১২ : ৫ ও লূক ১৬ : ২৩ পদ দেখুন ।
আমরা কিভাবে পাপের ক্ষমা পেতে পারি
ঈশ্বরের বিচার সুনিশ্চিত , আর সব পাপীকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে । আমাদের জন্য মৃত্যুবরণ করতে ঈশ্বর তাঁর প্রিয় এবং নিষ্পাপ পুত্র যীশুকে পাঠালেন । শুধু মাত্র যীশুর রক্তপাতের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের বিচার সন্তোষজনকভাবে শেষ হয়েছে । আর যীশু মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে উঠে পাপ ও মৃত্যুর উপরে বিজয়ী হয়েছেন । আমরা যদি আমাদের পাপের জন্য অনুতাপ করি এবং যীশুকে উদ্ধারকর্তা রূপে গ্রহণ করি, তাহলে সেই মুহূর্তে আমরা নতুন জীবন পেতে পারি এবং স্বর্গের অনন্ত - কালীন জীবনের ভাগী হতে পারি ।
ঈশ্বর আমাদের ভালবাসেন এবং আমাদের রক্ষা করতে চান - আমাদের প্রতি ঈশ্বরের ভালোবাসা এইভাবে প্রকাশিত হয়েছে - তিনি তাঁর একমাত্র পুত্রকে এ জগতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন যেন আমরা তাঁর মধ্য দিয়ে জীবন পাই । আমরা যে ঈশ্বরকে ভালবেসে ছিলাম তা নয়, কিন্তু তিনি আমাদের ভালবেসে তাঁর পুত্রকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন , যেন পুত্র তাঁর নিজের জীবন - উৎসর্গের দ্বারা আমাদের পাপ দূর করে ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করেন । এটাই হল ভালবাসা । ( ১ যোহন ৪ : ৯ - ১০ পদ ) ।
মথি ১১ : ২৮, প্রকাশিত বাক্য ৩ : ২০, এবং যোহন ৩ : ১৬ পদ দেখুন ।
আমাদের নতুন করে জন্ম হওয়া দরকার - আমি যে আপনাকে বললাম, আপনাদের নতুন করে জন্ম হওয়া দরকার, এতে আশ্চর্য হবেন না । বাতাস যেদিকে ইচ্ছা সেই দিকে বয় আর আপনি তার শব্দ শুনতে পান, কিন্তু কোথা থেকে আসে এবং কোথায়ই বা যায় তা আপনি জানেন না । পবিত্র আত্মা থেকে যাদের জন্ম হয়েছে তাদেরও ঠিক সেই রকম হয় । ( যোহন ৩ : ৭ - ৮ পদ ) ।
শুধু ভালো কাজই যথেষ্ট নয় - কোন সৎ কাজের জন্য তিনি আমাদের উদ্ধার করেন নি, তাঁর করুণার জন্যই তা করলেন । পবিত্র আত্মার দ্বারা নতুন জন্ম দান করে ও নতুন ভাবে সৃষ্টি করে তিনি আমাদের অন্তর ধুয়ে পরিষ্কার করলেন, আর এই ভাবেই তিনি আমাদের উদ্ধার করলেন । ( তীত ৩ : ৫ পদ ) ।
মথি ৫ : ২০, রোমীয় ৩ : ২০, গালাতীয় ২ : ১৬ এবং ইফিষীয় ২ : ৯ পদ দেখুন ।
শুধুমাত্র যীশুর মাধ্যমে উদ্ধার পাওয়া যায় - যীশু থোমাকে বললেন, ‘ আমিই পথ, সত্য আর জীবন । আমার মধ্য দিয়ে না গেলে কেউই পিতার কাছে যেতে পারে না । “ ( যোহন ১৪ : ৬ পদ ) ।
যোহন ১ : ১২, মথি ১ : ২১, রোমীয় ১ : ১৬, প্রেরিত ৪ : ১০ - ১২ এবং ১ তীমথিয় ২ : ৫, ৬ পদ দেখুন ।
অনুগ্রহে বিশ্বাস দ্বারা আমরা উদ্ধার পাই - ঈশ্বরের দয়ায় বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে তোমরা পাপ থেকে উদ্ধার পেয়েছ । এটা তোমাদের নিজেদের দ্বারা হয়নি, তা ঈশ্বরেরই দান ।
( ইফিষীয় ২ : ৮ পদ ) ।
রোমীয় ৩ : ২২ - ২৪ এবং লূক ৭ : ৫০ পদ দেখুন ।
উদ্ধার পাবার উপায়
একজন পাপী যখন পাপ থেকে ফেরে এবং সম্পূর্ণভাবে ঈশ্বরের কাছে আত্মসমর্পণ করে, তখন তার দেহে ও মনে পরিবর্তন ঘটে । তার নিজের সুখ আর সন্তুষ্টির জীবন তখন ঈশ্বরের পথে চলার জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে শুরু করে । এই হল, নতুন জন্ম, এক নতুন জীবনের পথ !
নতুন করে জন্ম লাভ করার অভিজ্ঞতা বুঝতে, এখানে কিছু বাইবেলের অংশ তুলে ধরা হলঃ
চেতনা পাওয়া
এই কথা শুনে লোকেরা মনে আঘাত পেল । তারা পিতর ও অন্যান্য প্রেরিতদের জিজ্ঞাসা করল , “ভাইয়েরা, আমরা কি করব ?” (প্রেরিত ২ : ৩৭ পদ ) ।
গীতসংহিতা ৫১ : ৩ পদ, গীতসংহিতা ৭৩ : ২১ এবং দানিয়েল ৯ : ৫ পদ দেখুন ।
দুঃখ
ঈশ্বর যে দুঃখ দেন তাতে পাপ থেকে মন ফেরে এবং তার ফলে পাপ থেকে উদ্ধার পাওয়া যায়, ( ২ করিন্থীয় ৭ : ১০ ক পদ ) ।
২ শমূয়েল ১২ : ১৩, গীতসংহিতা ৫১ : ৫, মথি ৫ : ৩ - ৪ এবং মথি ২৬ : ৭৫ পদ দেখুন ।
পাপ স্বীকার
যদি আমরা আমাদের পাপ স্বীকার করি তবে তিনি তখনই আমাদের পাপ ক্ষমা করেন এবং সমস্ত অন্যায় থেকে আমাদের শুচি করেন, ( ১ যোহন ১ : ৯ ক পদ ) ।
যাকোব ৫ : ১৬ এবং গীতসংহিতা ৫১ : ৩ পদ দেখুন ।
বিশ্বাস
বিশ্বাস ছাড়া ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করা অসম্ভব , কারণ ঈশ্বরের কাছে যে যায়, তাকে বিশ্বাস করতে হবে যে, ঈশ্বর আছেন এবং যারা তাঁর ইচ্ছামত চলে তারা তাঁর হাত থেকে তাদের পাওনা পায় । ( ইব্রীয় ১১ : ৬ পদ ) ।
প্রেরিত ৯ : ৬ এবং প্রেরিত ১১ : ১৮ পদ দেখুন ।
ক্ষতিপূরণ
এই রকম কোন পাপ করে যদি কেউ সদাপ্রভুর প্রতি অবিশ্বস্ত হয়ে দোষী হয়, তবে সে যা চুরি করেছে বা ঠকিয়ে নিয়েছে বা তার কাছে জমা রাখা হয়েছে কিম্বা হারানো জিনিষ যা সে পেয়েছে বা যে জিনিষের বিষয়ে সে মিথ্যা শপথ করেছে তা তাকে ফেরত দিতে হবে । ( লেবীয় ৬ : ৩ - ৪ পদ ) ।
যাত্রাপুস্তক ২২ : ১ এবং লূক ১৯ : ১ - ১০ পদ দেখুন ।
বাধ্যতা
তখন আমি বললাম , ‘প্রভু আমি কি করব ?’ প্রভু বললেন, ‘ ওঠো, দামেস্কে যাও । তোমার জন্য যা ঠিক করে রাখা হয়েছে তা সেখানেই তোমাকে বলা হবে । ( প্রেরিত ২২ : ১০ পদ ) ।
প্রেরিত ৯ অধ্যায় দেখুন ।
নতুন সৃষ্টি
যদি কেউ খ্রিষ্টের সঙ্গে যুক্ত হয়ে থাকে তবে সে নতুনভাবে সৃষ্ট হল । তার পুরানো সব কিছু মুছে গিয়ে সব নতুন হয়ে উঠেছে । ( ২ করিন্থীয় ৫ : ১৭ ) ।
গালাতীয় ৫ : ১৯ - ২৩ পদ দেখুন ।
পবিত্র আত্মার সাক্ষ্য
পবিত্র আত্মাও নিজে আমাদের অন্তরে এই সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, আমরা ঈশ্বরের সন্তান । ( রোমীয় ৮ : ১৬ খ পদ ) ।
১ যোহন ৪ : ১৩, প্রেরিত ২ : ৩৮ এবং রোমীয় ৮ : ৯ পদ দেখুন ।
একজন উদ্ধার প্রাপ্ত আত্মার আনন্দ ও কৃতজ্ঞতা বোধ তাকে ঈশ্বরের বাক্যে এবং পবিত্র আত্মাতে বাধ্য থাকতে অনুপ্রাণিত করে । প্রভুর উপরে বাধ্যতা আশীর্বাদ এবং সন্তুষ্টি এনে দেয় যা জগতের দেওয়া সব কিছুর উপরে । তার আইন-কানুনের প্রতি বিশ্বস্ততা অনেক পুরস্কার এনে দেয় । “কিন্তু যে শেষ পর্যন্ত স্থির থাকবে সে উদ্ধার পাবে ।” ( মথি ১০ : ২২ খ পদ ) ।