খ্রিস্টান জীবন

আমরা এমন এক পৃথিবীতে বাস করি যেখানে সবাই কমবেশী অযুহাত দেখায় । যে কোন বিষয়ে হোক, আপনার মন একটা অযুহাত দেখানোর চিন্তা করে থাকে, কারণ আপনি হয়তো সব ক্ষেত্রে সত্যের মোকাবেলা করতে চান না । মনে মনে ভেবে থাকেন , কোন একটা অযুহাত দেখিয়ে পার পাওয়া যায় কি - না, উদ্ধার পাওয়া যায় কি - না ! কিন্তু আপনি কি মনে করেন ঈশ্বরের সাক্ষাতে অযুহাত দেখিয়ে আপনি পার পাবেন বা উদ্ধার পাবেন ? উদ্ধার পাওয়ার বিষয়ে কোন অযুহাত দেখানো যাবে কি ? আপনার কোন অজুহাত কখনোই আপনাকে উদ্ধার করতে পারে না । আদম ও হবা পাপ করেছিল, বিভিন্ন অযুহাতও দেখিয়েছিল এবং একজন অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করেছিল । তারা এই ধারণা করেছিল, ঈশ্বর তাদের পাপের দিকে দৃষ্টি দেবেন না , কারণ কেন পাপ করেছে তার বেশ কিছু কারণ তারা দেখাতে পেরেছে । তারপরও আমরা বাইবেলে পড়ি, তবুও ঈশ্বর তাদের শাস্তি দিয়েছেন । যতই কৌশলপূর্ণ হোক্ না কেন, যতই নিজেকে নির্দোষ দেখানোর চেষ্টা করেন না কেন, ঈশ্বর কোন অযুহাতই মেনে নেবেন না ( আদিপুস্তক ৩ : ৯ - ১৯ ; গালাতীয় ৬ : ৭ - ৮ পদ ) ।

আপনি কি নিঃসঙ্গতা অনুভব করেন, অথবা হৃদয়ের গভীরে এক ধরনের অপরাধবোধ এবং ভয় অনুভব করেন? আপনি কি কখনও আপনার জীবনের উদ্দেশ্যের বিষয়ে চিন্তা করেন? অনেকেই এ ধরনের অনুভূতির উত্তর খুঁজে পেতে চেষ্টা করে থাকে। কোন উৎসব অথবা বিনোদন কিছু সময়ের জন্য এই অনুভূতিগুলিকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারে। সম্ভবতঃ তারপরেই এইগুলি আগের চেয়ে আরো কঠিনভাবে আপনার জীবনে ফিরে আসে। সৃষ্টির শুরুতেই ঈশ্বর মানুষকে নির্দোষ করে সৃষ্টি করেছিলেন। মানুষের কোন সমস্যা ছিল না। কিন্তু শয়তান এসে মানুষকে বিপথে চালিয়ে ঈশ্বরের অবাধ্য করল। মানুষ পাপের মধ্যে পড়ল। সে আর নির্দোষ থাকতে পারল না। সেই সময় থেকেই সব মানুষ পাপী।

আপনি কি ক্ষমা পেয়েছেন ? এই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের সঠিক উত্তরের উপরে নির্ভর করছে আপনার অনন্তকালীন ভবিষ্যত । পবিত্র বাইবেল আমাদের এই শিক্ষা দেয়,”নির্দোষ কেউ নেই, একজনও নেই” ( রোমীয় ৩:১০ পদ ) । একই অধ্যায়ের ২৩ পদ এই কথা বলে, “কারণ সবাই পাপ করেছে এবং ঈশ্বরের প্রশংসা পাওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়েছে।” যদি আমরা আমাদের পাপের ফল থেকে উদ্ধার পেতে চাই, তাহলে অবশ্যই ঈশ্বরের কাছ থেকে ক্ষমা পেতে হবে। কোন একদিন বিচারের দিনে প্রভুর সাথে আমাদের দেখা হবে। “ খ্রীষ্টের বিচার -আসনের সামনে আমাদের সকলের সবকিছু প্রকাশ করা হবে, যেন আমরা প্রত্যেকে এই দেহে থাকতে যা কিছু করেছি, তা ভাল হোক বা মন্দ হোক, সেই হিসেবে তার পাওনা পাই” ( ২ করিন্থীয় ৫:১০ পদ )।

আজকের পৃথিবীতে এমন লোক আছে যে বলে, ‘আমি স্বর্গে যাবার মত এত ভাল না আবার নরকে যাবার মত এত খারাপও না ।’ তারা মনে করে তারা বেশ ভাল আছে এবং ঈশ্বর যে কোন ভাবে তাদেরকে স্বর্গে স্থান দেবেন ।

দেশের কোন নেতার সাথে অথবা কোন বিখ্যাত ব্যক্তির সাথে কথা বলতে আপনি কি পছন্দ করেন ? আবার, তাদের কাউকে আপনার বাসায় পেতে কেমন লাগবে ? আমরা অনেকেই এমন সুযোগ পাই না । কিন্তু আপনি কি জানেন, এদের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ একজনের সাথে আপনি কথা বলতে পারেন ? আবার, এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে আপনি আপনার বাসায়ও পেতে পারেন !

দি চার্চ অফ গড বা ঈশ্বরের মন্ডলী কোন মানুষের সৃষ্ট সংস্থা নয়, কিন্তু প্রভুরই সৃষ্ট । যীশু বলেছেন, “ আর এই পাথরের উপরেই আমি আমার মন্ডলী গড়ে তুলব” ( মথি ১৬ : ১৮ পদ ) । যীশু জানতেন যে ঈশ্বরের মহান পরিকল্পনায় মন্ডলী অতি আবশ্যকীয় এবং এই ঘোষণাও দিয়েছিলেন যে মন্ডলী অনন্তকাল ধরে থাকবে । চার্চ বা মন্ডলী হচ্ছে, বিশ্বাসীদের জন্য আত্মিক বাসগৃহ , যখন তারা এই পৃথিবীতে থাকে; আর স্বর্গ হচ্ছে অনন্ত কালের জন্য উদ্ধার প্রাপ্তদের বাসগৃহ ।

আমরা যখন কোন স্থানে বা কাজের জায়গায় কোন বন্ধু - বান্ধবের সাথে দেখা করে বিদায় নিই , তখন প্রায়ই এই কথাটি শুনে থাকি । কিন্তু আমরা কি আশা করি , কি করলে ঐ দিনটি সত্যিই ভালো হবে ? কোন সমস্যা এবং দ্বন্দ্ব ছাড়া দিনটি ভালো যাবে এবং সকলেই আমাদের সাথে ভাল ব্যবহার করবে ?

যেহেতু আমি একজন খ্রীষ্টিয়ান এবং পরিত্রাণ বা উদ্ধার পেয়েছি , মানে পাপের ক্ষমা পেয়েছি ; এবং পবিত্র আত্মা আমার হৃদয়ে বাস করেন , সেহেতু স্বর্গে আমার অধিকার আছে । আমি আমার অতীত জীবনের পাপ সকল স্বীকার করেছি এবং ত্যাগ করেছি । “ যে লোক নিজের পাপ গোপন করে তার উন্নতি হয় না , কিন্তু যে তা স্বীকার করে ত্যাগ করে সে করুণা পায় ।” ( হিতোপদেশ ২৮ : ১৩ পদ ) । যীশুর রক্তের মাধ্যমে আমি সম্পূর্ণ ক্ষমা ও মুক্তি লাভ করেছি । “ এই পুত্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমরা মুক্ত হয়েছি , অর্থাৎ আমরা পাপের ক্ষমা পেয়েছি ।” ( কলসীয় ১ : ১৪ পদ ) । যীশু আমার হৃদয়ে বাস করাতে আমার অসংযত ইচ্ছা , হালকা মনোভাব , নোংরা কথাবার্তা , কৌতুক , গালাগালি , জাগতিক আনন্দ স্ফুর্তি , গর্ব এবং অন্যান্য পাপে পূর্ণ আমোদ - প্রমোদ এর ইচ্ছা দূর হয়ে গেছে ।

পবিত্র বাইবেল হচ্ছে এমন এক দামী বই যা প্রতিটি প্রাণের প্রয়োজন মেটায় । মানুষের দেহের পুষ্টির জন্য যেমন খাদ্যের প্রয়োজন, ঠিক তেমনি বাইবেলের বাণীগুলি মানুষের আত্মার পুষ্টির যোগান দেয় । সঠিক সময়ে সঠিক জিনিসটি জানার জন্য ও সঠিক প্রয়োজন মেটানোর জন্য বাইবেলেই যথার্থ কথা লেখা হয়েছে যা আসলে খাঁটি সোনার মতন ।